দেশের সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে ‘জিপিএ-ভিত্তিক’ ভর্তি পদ্ধতিই বহাল থাকছে। গত ১৫ মে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে ভর্তি পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও, সেখানে নতুন কোনো পদ্ধতি চূড়ান্ত করা হয়নি। ফলে প্রাথমিকভাবে আগের পদ্ধতি—অর্থাৎ এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ (জিপিএ)-এর ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, একসময় দেশের সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হতো। মেধার মূল্যায়নে এই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও, ২০১৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এই পদ্ধতিকে বাদ দিয়ে জিপিএ-ভিত্তিক ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করে। ওই সময় সংশ্লিষ্টরা জানায়, এভাবে ভর্তি কার্যক্রম আরও সহজ ও সমন্বিত হবে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক হবে। তবে দীর্ঘদিন পর পুনরায় ভর্তি পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে জিপিএ-ভিত্তিক ভর্তি পদ্ধতি বাতিল করে ভর্তি পরীক্ষা চালুর একটি প্রাথমিক উদ্যোগ নেয় কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। এ বিষয়ে গত ১৫ মে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে ওই বৈঠকে নতুন কোনো পদ্ধতি চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বোর্ডকে ভর্তি পরীক্ষার বাস্তবায়ন-সক্ষমতা যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে ভর্তি পদ্ধতি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ওই বৈঠকে পলিটেকনিক ভর্তি ছাড়াও আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা আলোচনায় আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ‘সেদিন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর ভর্তি পদ্ধতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা জিপিএ-ভিত্তিক পূর্ববর্তী ভর্তি পদ্ধতিই অব্যাহত রাখার পক্ষে মনে হয়েছে। তবে তারা বোর্ডের কাছে ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্যতা যাচাই করে একটি প্রস্তাবনা দিতে বলেছেন। আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে, মন্ত্রণালয় জিপিএ-ভিত্তিক পদ্ধতিতেই তুলনামূলকভাবে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। ফলে আগামী শিক্ষাবর্ষেও এই পদ্ধতিতেই ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (কারিকুলাম) প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুল কবীর বলেন, ‘সম্প্রতি একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ভর্তি পদ্ধতির পাশাপাশি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে ভর্তি পদ্ধতি কীভাবে হবে—সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি এখনও প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া আলোচিত কয়েকটি বিষয়ের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করতে খুব শিগগিরই আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।’