বাংলাদেশের সীমান্তের ১০ কি:মি: ভেতরে আরাকান আর্মি…

0
3

বাংলাদেশ সীমান্তের ১০কিমি: ভেতরে মায়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর জলকেলি উৎসব,নিষ্ক্রিয় বিজিবি-দেশটির সার্বভৌমত্বে চরম হুমকি নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান-বাংলাদেশ 

বাংলাদেশের ভেতরে ১০ কিলোমিটার অনুপ্রবেশ করে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি জলকেলি উৎসব উদযাপন করেছে। বান্দরবানের থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের রেমাক্রি মুখ এলাকায় গত ১৬ ও ১৭ এপ্রিল এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন উক্ত গোষ্ঠীর ইউনিফর্মধারী ও অস্ত্রধারী সদস্যরা।

 

অত্যন্ত উদ্বেগজনকভাবে এই আয়োজন হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে, যেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জেলার পরিষদ সদস্যদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। অনুষ্ঠানস্থলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন, তবে তাদের ভূমিকা ছিল পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়।

 

সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া

উৎসবের ছবি ও ভিডিও আরাকান আর্মির নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা দ্রুত ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, অনুষ্ঠানের মঞ্চ এবং চারপাশে আরাকান আর্মি ও তাদের রাজনৈতিক শাখা ইউএলএ-এর পতাকা, প্রতীক ও অস্ত্রধারী সদস্যদের সরব উপস্থিতি। অনুষ্ঠানস্থলে স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর (বিশেষ করে মারমা সম্প্রদায়) বিপুল অংশগ্রহণ ছিল। অংশগ্রহণকারী সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৬০০-৭০০ জনের মতো।

সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন, জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি

এই ঘটনা দেশের ভেতরে সরাসরি সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষক ও স্থানীয় সচেতন মহল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বিজিবির নিষ্ক্রিয় অবস্থান এবং সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো কার্যকর প্রতিক্রিয়া না থাকার বিষয়টিকে জাতীয় নিরাপত্তার চরম ব্যর্থতা হিসেবে অভিহিত করেছেন।

 

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, “বাংলাদেশের ভেতরে ১০ কিমি প্রবেশ করে একটি বিদেশি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এমন অনুষ্ঠান আয়োজন এবং তা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার—এটা শুধু উদ্বেগজনক নয়, এটা আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ।”

 

বিজিবির অবস্থান

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, “জাতীয় নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখার জন্য” তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে স্থানীয়রা বলছেন, “এই ‘শান্তি রক্ষা’র নামে নীরব দর্শকের ভূমিকা নেওয়া আসলে নিরাপত্তার ব্যর্থতারই পরিচায়ক।”

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ঘটনায় সরকারের উচিত স্পষ্ট ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া জানানো এবং তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এ ধরনের অনুপ্রবেশ ও প্রদর্শনী শুধু আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনই নয়, বাংলাদেশের প্রতি প্রকাশ্য অবজ্ঞা বা বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল।

 

বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তে নজরদারি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায়, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এমন বিদেশি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর তৎপরতা ভবিষ্যতে আরও বড় জাতীয় নিরাপত্তা সংকট তৈরি করতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে