স্বামী মর্গে, মেয়ে আইসিইউতে, যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী
| ১৯ মে ২০২৫,
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বানিয়াপাড়ায় সোমবার সকালে একটি যাত্রীবাহী বাসের চাপায় একই পরিবারের তিনজনের জীবন একসাথে তছনছ হয়ে যায়। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন মোটরসাইকেল আরোহী শান্ত, তার স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়ে উম্মে তুরাইয়া। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মারা যান শান্ত। বর্তমানে তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
মেয়ে তুরাইয়া আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। দুর্ঘটনায় তার এক পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আর তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কাতরাচ্ছেন হাসপাতালে এক নম্বর ওয়ার্ডে—শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে আছে, চলছে চিকিৎসা। মানসিক অবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল। এখনো তাকে স্বামীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি।
শান্তর ভাতিজি জামাই ফারুক হোসেন জানান, সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে মেয়েকে স্কুলে নেওয়ার পথে বানিয়াপাড়ায় ঢাকা-গামী সুপার সনি পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে শান্ত ও তার মেয়ে বাসের চাকার নিচে পড়ে যান। ঘটনার ভয়াবহতায় ঘটনাস্থলেই তাদের দুইজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে দ্রুত রামেক হাসপাতালে পাঠান।
চিকিৎসকরা তাদের ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করলেও, শান্তর মৃত্যুর খবরে তা স্থগিত করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাসের চালক ও সহকারী দুর্ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায়। তবে বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.ফ.ম আছাদুজ্জামান বলেন, “দুর্ঘটনার বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে মামলা হবে। বাসটি জব্দ করা হয়েছে।”
শান্তর মরদেহ গ্রামের বাড়ি নাটোরের লালপুরে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
একটি মুহূর্তে সব কিছু বদলে গেল—স্বামী নেই, মেয়ে আইসিইউতে, আর স্ত্রী যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা গোটা এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে।
—