গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকায় মন্ট্রিমস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। এর আগে তিনি তার কারখানায় অসম্মান, বৈষম্যের শিকার ও নিগৃহীত হওয়ার বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন।
এ ঘটনায় ওই কারখানাসহ বেশকিছু কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন তারা।
ওই শ্রমিকের নাম মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী (২৩)। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিষপান করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায়। তিনি কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকায় স্ত্রীসহ থাকতেন।
ঘটনার আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে ইদ্রিস আলী চাকরিতে অনিশ্চয়তা, দায়িত্বের অতিরিক্ত চাপ এবং কর্মকর্তাদের প্রতি অসন্তোষের কথা তুলে ধরেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আমরা যারা মেশিন চালাই, আমাদের প্রতি কোনো সম্মান নেই। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেও পারমানেন্ট না করে ডেইলি বেসিসে রাখা হয়েছে।’
ওই কারখানার দুই কর্মকর্তা হারুন ও কামরুল তাকে বারবার হেনস্তা করেছেন এবং তারা তার চাকরি স্থায়ীকরণের মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন বলে ইদ্রিস আলী উল্লেখ করেন।
নিহতের স্ত্রী কালবেলাকে জানান, ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরপরই আনুমানিক রাত ১২টার দিকে তার অজান্তে বাসায় বিষপান করেন ইদ্রিস আলী। পরে বুঝতে পেরে পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন
আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাতেই তার মৃত্যু হয়।
কারখানার সহকর্মীরা কালবেলাকে জানান, ইদ্রিস পরিশ্রমী ও শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিলেন। অফিসের কিছু কর্মকর্তার বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ইদ্রিস মানসিক চাপে ছিলেন। সহকর্মীদের অনেকেই স্থায়ী হলেও, তার না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন ইদ্রিস আলী।
এ বিষয়ে মন্ট্রিমস লিমিটেড কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কারখানার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘একজন শ্রমিক মারা গেছে। আমরা একটু ব্যস্ত আছি, বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলব।’